ছোট্ট তানি। বয়স ছয়। সে অশোকনগরে ওর মার সাথে থাকে। ও যখন খুব ছোটো তখনই ওর বাবা মারা যায়। রাত্রিবেলা ঘুমনোর পর হঠাৎ যদি ঘুম ভেঙে যায়, ও প্রায়ই দেখে ওর মা আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। ও কেঁদে ফেললেও চুপ করে শুয়ে থাকে।
ওদের বাড়ির সামনে আছে একটি পার্ক। খুব সুন্দর, সেখানে গাছগাছালি ভর্তি। তানি প্রতিদিন সেই পার্কে যায়। সে গিয়ে দেখে অনেক দাদু দিদিমারা বসে গল্প করছে, কেউ আবার ব্যায়াম করছে , দাদা-দিদিরা খেলছে। তানি সেখানে গিয়ে এক কোণে চুপ করে বসে থাকে, আর একটা গাছকে জড়িয়ে থাকে। সেই গাছটা হচ্ছে কৃষ্ণচূড়া গাছ। সেটা ওর বাবা লাগিয়েছিলেন, ও এই গাছটার সাথে কথাও বলে।
একদিন অনেক লোক আসলো, হাতে ছিল অনেক কাগজ। তারা কী যেন একটা করল। তারপর চলেও গেল। তার কিছুদিন পরে ওই লোকগুলো অনেক বড় একটা গাড়ি আনল। তানি শুনল পার্কটাকে ভেঙে ও গাছগুলোকে কেটে বড় বাড়ি বানানো হবে। সেই পার্কে যতজন ছিল সবাই ভীড় করে রইল। কেউ কিছু করতে পারছিল না। তানির বুকে সাহস আসল, ও এগিয়ে গেল ভীড়ের দিকে। বাজে লোকগুলোকে ও বলল এখানে বড় বাড়ি বানানো যাবে না। এত ছোটো একটা মেয়ে প্রতিবাদ করছে, দেখে সবাই প্রতিবাদ করল। শেষ পর্যন্ত বাজে লোকগুলোকে বলতেই হল যে তারা বাড়ি এখানে বানাবে না। সবাই হৈ চৈ শুরু করে দিল। তানি গাছটার দিকে এগিয়ে গেল, ওর মনে হল ওর বাবা যেন ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে।
অনুসূয়া চ্যাটার্জি